ঈদের ছুটিতে লাখো পর্যটকের সমাগম হয়েছে পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে। জেলার অন্যান্য পর্যটনকেন্দ্রগুলোতেও দর্শনার্থীদের ঢল নেমেছে। বুধবার (৪ মে) দুপুরের দিকে সৈকতের বালিয়াড়িতে শুধু মানুষ আর মানুষ দেখা যাছে। মানুষের স্রোতে যেন তিল ধারণের ঠাঁই নেই।
সৈকত ছাড়াও জেলার প্রায় সবগুলো পর্যটন স্পট হাজারো পর্যটকের উপস্থিতিতে এখন প্রাণচঞ্চল। মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির, হিমছড়ি, ইনানী, দরিয়ানগর, সোনাদিয়া, বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কসহ বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় বিপুল পরিমাণ পর্যটকের সমাগম রয়েছে। এ ছাড়াও কক্সবাজার শহরের বার্মিজ মার্কেট, রাখাইন পল্লী, বৌদ্ধ মন্দির ও রামুর বৌদ্ধ মন্দিরেও পর্যটকদের প্রচুর ভিড় দেখা গেছে।
রাজধানী ঢাকার উত্তরা থেকে কক্সবাজার ভ্রমণে আসা লুবনা রহমান বলেন, ঈদের দিন রাতে গাড়িতে উঠি। সকালে কক্সবাজারে পৌঁছেছি। কিন্তু এখানে কোনো হোটেল ফাঁকা পাইনি। তবুও বিশাল সমুদ্রের সামনে এলে মনটা জুড়িয়ে যায়। এটাই কক্সবাজার ভ্রমণের আনন্দ।
উত্তরা থেকে সপরিবারে কক্সবাজার ভ্রমণে এসেছেন মো. নোমান। তিনি বলেন, ইনানী, হিমছড়ি ও রামুর বৌদ্ধবিহার দেখেছি। নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভালো। যে কারণে সৈকত ও আশপাশের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন পর্যটকরা।
এদিকে পর্যটকদের বাড়তি চাপ সামাল দিতে হোটেল, মোটেল ও গেস্টহাউস মালিকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৪ মে পর্যন্ত বেশিরভাগ হোটেল ও গেস্টহাউসগুলো বুকিং হয়ে গেছে। পাঁচ লাখের অধিক পর্যটক উপস্থিতির আশা করছে পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। এ কয়েকদিনে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার বাণিজ্য হতে পারে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, সৈকতের লাবণী, সুগন্ধা, কলাতলীসহ ১১টি পয়েন্টে তথ্যকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। পর্যটকদের করোনা সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধি মানতে সর্বদা সচেতনতামূলক মাইকিং ও প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। পর্যটক হয়রানি বন্ধে মাঠে থাকছে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত। কোথাও পর্যটক হয়রানির অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্যদিকে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ। নিরাপত্তার পাশাপাশি প্রাথমিক চিকিৎসা, তথ্যসেবা, পানীয় জলের ব্যবস্থাসহ নানা সেবামূলক কার্যক্রমের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল করিম।
তিনি জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সতর্ক অবস্থায় দায়িত্ব পালন করছে ট্যুরিস্ট ও জেলা পুলিশ। মোতায়েন রাখা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশও। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে সিসিটিভির আওতায় আনা হয়েছে পর্যটন স্পটগুলো। ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে দ্রুত সাধারণ চিকিৎসা ও খাবার পানির ব্যবস্থাও রয়েছে।
আওয়াজ ডটকম ডটবিডি, ০৪ মে ২০২২