ইন্টারনেটের দামের ক্ষেত্রে জাতিসংঘ যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত করে দিয়েছিল, তা পূরণ করতে পেরেছে বাংলাদেশ। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়ন (আইটিইউ) ও বৈশ্বিক ইন্টারনেট ফোরাম অ্যালায়েন্স ফর অ্যাফোর্ডেবল ইন্টারনেটের (এফোরএআই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
‘দ্য অ্যাফোর্ডেবিলিটি অব আইসিটি সার্ভিসেস ২০২১’ নামের ওই প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, মোবাইল ইন্টারনেটের দামের ক্ষেত্রে গত বছর জাতিসংঘের ব্রডব্যান্ড কমিশনের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পেরেছে বিশ্বের ৯৬টি দেশ। আর ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের দামের ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পেরেছে ৬৪টি দেশ।
২০২১ সালে বিশ্বের বেশির ভাগ স্বল্পোন্নত দেশে ইন্টারনেটের দাম জাতিসংঘ নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ছিল। সেই জায়গা থেকে বাংলাদেশসহ মাত্র চারটি স্বল্পোন্নত দেশ জাতিসংঘের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করেছে। বাকি তিন দেশ হল ভুটান, মিয়ানমার ও নেপাল।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের ভিত্তিতে একটি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয় জাতিসংঘের ব্রডব্যান্ড কমিশন। লক্ষ্য অনুযায়ী, একটি দেশের জাতীয় মাথাপিছু আয় যা হবে, তার দুই শতাংশের কম খরচ হবে ইন্টারনেট বাবদ। এ হিসাবে ২০২১ সালে বাংলাদেশে ইন্টারনেটের দাম জাতিসংঘের এ অংকের মধ্যেই ছিল।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ২০২১ সালে বাংলাদেশে প্রতি দুই জিবি মোবাইল ডেটাভিত্তিক ইন্টারনেটের জন্য মাসিক মাথাপিছু জাতীয় আয়ের ১ দশমিক ৩৬ শতাংশ ব্যয় হয়, যার মূল্য দুই দশমিক ৩২ ডলার। ক্রয়সক্ষমতার সমতার হিসাবে এ ব্যয় ৫ দশমিক ৯৮ ডলার।
মোবাইল ইন্টারনেটের সাশ্রয়ী দামে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে আছে ভারত, ভুটান, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা।
এছাড়া বাংলাদেশে প্রতি পাঁচ জিবি তারযুক্ত, অর্থাৎ ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগের জন্য মাসিক মাথাপিছু জাতীয় আয়ের ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ ব্যয় হয়, যার মূল্য ৩ দশমিক ৩৯ ডলার। ক্রয়সক্ষমতার সমতার হিসাবে এ ব্যয় ৮ দশমিক ৭৩ ডলার। ব্রডব্যান্ডে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের চেয়ে নেপাল ও শ্রীলঙ্কায় ব্যয় কম।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২০ সালের তুলনায় সারাবিশ্বে ইন্টারনেটের চাহিদা ও ব্যবহার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষ তার আয় থেকে এ খাতে ব্যয় বাড়িয়েছে।
আইটিইউর মহাসচিব হাওলিন ঝাও বলেন, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা এখন বিলাসিতা নয়। যোগাযোগ, টেলিওয়ার্কিং, অনলাইন শিক্ষা ও অন্যান্য কাজে এখন এ সেবা জরুরি হয়ে উঠেছে। সর্বজনীন ও অর্থপূর্ণ সংযোগের লক্ষ্য অর্জন করতে হলে ইন্টারনেটকে অবশ্যই ক্রয়ক্ষমতার ভেতরে নিতে কাজ করতে হবে।