তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, বাংলাদেশে হুন্দাই গাড়ি তৈরির মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতার পরিচয় দিয়েছে। ফেয়ার টেকনলোজি- হুন্দাই কোম্পানির গাড়ি তৈরি ও যন্ত্রাংশ সংযোজনের মাধ্যমে বিশ্বের কাছে আমরা বাংলাদেশের সক্ষমতা তুলে ধরতে পারবো।
অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’-এর জাতীয় রূপকল্প বাস্তবায়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ ছিল কারখানাটির উদ্বোধন।
তিনি বলেন, সড়কে চলাচলকারী দ্রুতগতির ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ হুন্দাই এসইউভিগুলো দ্রুতগতিতে চলা বাংলাদেশকেই প্রতীকায়িত করবে।
বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় কোরিয়ান অটোমোবাইল জায়ান্ট হুন্দাইয়ের প্রযুক্তিগত সহায়তায় কারখানাটি প্রতিষ্ঠা করেছে ফেয়ার টেকনোলজি। জনপ্রিয় এসইউভি ক্রেটা এই কারখানাটিতে তৈরি হবে।
উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন যে, প্রথমদিকে প্রতিদিন এক শিফট পরিচালনার মাধ্যমে ফেয়ার টেকনোলজি-হুন্দাই কারখানাতে বছরে ৩,০০০টি ক্রেটা এসইউভি উৎপাদন করা সম্ভব হবে। সংখ্যাটিকে ধীরে ধীরে বছরে ১০ হাজারে উন্নীত করা হবে। প্রতিটি ক্রেটা উৎপাদনের জন্য ১ হাজারেরও বেশি পার্টস এবং বিভিন্ন স্তরের পেইন্টিং আমদানি করা হবে।
ফেয়ার টেকনোলজি প্রকল্পে বিনিয়োগ করলেও বিনিয়োগের পরিমাণ প্রকাশ করেনি। কারখানাটি ৩০০ জনের কর্মসংস্থান তৈরি করবে বলে আশা করা হচ্ছে। যার মূল অংশ হবে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার এবং হুন্দাই দ্বারা প্রশিক্ষিত টেকনিশিয়ানদের জন্য।
প্রতিমন্ত্রী গত বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) গাজীপুর জেলার কালিয়া কৈইরে বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে স্থাপিত মোটরযান প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান “ফেয়ার টেকনোলজি- হুন্দাই” অটোমোবাইল ফ্যাক্টরিতে মেইডইন বাংলাদেশ ব্র্যান্ডের “ক্রিটাসহ বিভিন্ন মডেলের” গাড়ি উদ্বোধনের পূর্বে ফ্যাক্টরিতে গাড়ি তৈরি কার্যক্রম ও দেশের তৈরি কারখানয় বিভিন্ন মডেলের গাড়ি পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ মন্তব্য করেন।
এসময় গাড়ির যন্ত্রাংশ সংযোজন ও তৈরি প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত কারখানার কর্মীদের সঙ্গে কাজের পরিবেশ ও অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।
বিশ্বখ্যাত মোটর ব্র্যান্ড হুন্দাই এর টাকসন, ক্রিটা, ওস্টেরিক্স, ভেরনা ও প্যালিসাডি’র সর্বশেষ মডেলের হুন্দাই গাড়ি এখন তৈরি হচ্ছে গাজীপুরের কালিয়াকৈর বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে। মোট ৭টি লাইনে গাড়িগুলো তৈরি করছে বাংলাদেশের নবীন প্রকৌশলীরা। এরই মধ্যে বিক্রির জন্য প্রস্তুত ১০০ গাড়ি।
এছাড়াও বাংলাদেশে হুন্দাই কারখানা স্থাপনের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, সক্ষমতা ও ভবিষ্যত সম্ভবনা তুলে ধরা সম্ভব হলো। আগামী দিনে তাদেরকে (ফেয়ার টেকনলোজি) প্রশিক্ষণ ও নীতিগত সার্বিক সহযোগিতা করা হবে বলে প্রতিমন্ত্রী জানান।
আজ দেশের অটোমোবাইল শিল্পের জন্য এটা মাইল ফলক উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, গাড়ির ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে এই উদ্যোগ আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে আত্মনির্ভরশীল স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সহায়তা করবে। তাই হুন্দাই এবং ফেয়ার গ্রুপ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অন্যতম অংশীদার হয়ে থাকবে।
পরিদর্শনের সময় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ক্যাপ্টেন এ বি তাজুল ইসলাম (অব:), বাংলাদেশে নিযুক্ত কোরিয়ান রাষ্ট্রদূত লি জং-কিউন (Lee Jang-keun), ইন্ডিয়ান হুন্দাই মোটর এর প্রেসিডেন্ট মি. আনসো কিম, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. বিকর্ণ কুমার ঘোষ এবং ফেয়ার গ্রুপের চেয়্যারম্যান রুহুল আলম আল মাহবুব এসময় উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ফেয়ার টেকনোলজির ডিরেক্টর এবং সিইও মুতাসিম দাইয়ান বলেন, “আমরা বিনয়ের সাথে গর্ব প্রকাশ করছি যে, আমরা বিশ্বের সেরা হুন্দাই গাড়ি উৎপাদনে বাংলাদেশের সক্ষমতা প্রমাণ করেছি। আমরা বিশ্বাস করি এটি একটি অগ্রগতিশীল বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ একটি মাইলফলক। এই গৌরবময় মুহূর্তে, আমরা আমাদের জনগণের কাছে প্রতিযোগিতামূলক এবং সাশ্রয়ী মূল্যে হুন্ডাই এসইউভি ক্রেটা সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।”
আওয়াজ ডটকম ডটবিডি, ২৩ জানুয়ারী ২০২৩